আজ আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি দাগী সিনেমার গল্প। যেহেতু এই সিনেমাটি এখন হলে চলছে, তাই আমরা এক্সপ্লেইন দিচ্ছি শুধুই গল্প জানার উদ্দেশ্যে। কারও যদি সিনেমার মজা না নষ্ট করতে চান, তাহলে হলে গিয়ে অবশ্যই দেখে আসুন। কারণ এই ১৪–১৫ মিনিটে সিনেমার পুরো ইমোশন, চরিত্রের গভীরতা আর কষ্ট বোঝানো একেবারেই সম্ভব না। তাই স্পয়লার যাদের পছন্দ নয়, দয়া করে দূরে থাকুন।

গল্প শুরু হয় এক দাগী আসামী নিশান-এর জেল থেকে বের হয়ে আসা দিয়ে। সে ১৪ বছর ধরে জেলে ছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সে যখন বাড়ি ফিরছিল, তখন তার মনে ভেসে উঠছিলো পুরনো কিছু ভয়ঙ্কর স্মৃতি।

তার বাবা-মা বিস্মিত হয়ে ওঠে নিশানের মুক্তিতে। সে নিজের ঘরে ঢুকতেই ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যাই — ২০০৮ সালের ইন্ডিয়া।


সেখান থেকে সে বাংলাদেশে এক পণ্য চোরাচালান করে নিয়ে আসে। ১০ দিন ধরে সে নিখোঁজ থাকায় তার গার্লফ্রেন্ড জেরিন রেগে যায়। ফিরে এসে নিশান জেরিনকে মানিয়ে নেয়, দুজন আবার প্রেমে মেতে ওঠে। একদিন তারা ধরা পড়ে যায়, তখন জেরিন বলে — "আমাকে যদি ভালোবাসো, তাহলে বিয়ে করো।"

বিয়ের জন্য নিশান আবার ইন্ডিয়া যায়, কিন্তু সেখানে গিয়ে সে চোরাকারবারের জালে জড়িয়ে পড়ে। সে দেশে ফিরলে জেরিন খুঁজতে আসে, কিন্তু তখন জানা যায়, জেরিনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।


নিশান ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে জেরিনকে, আর বলে — "আমি তোমাকে সত্যিকারে ভালোবেসেছিলাম।"


তবে জেরিনের স্বামী সোহাগ তখন সত্যটা বুঝে যায় এবং বলে, “সে তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে।” কিন্তু শেষমেষ নিশান জেরিনকে জোর করে ধর্ষণ করে। সোহাগ বাধা দিতে এলে নিশান তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ছাদ থেকে, এবং সোহাগ মারা যায়।

নিশান গ্রেপ্তার হয়। এলাকার মানুষ তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, তার দাদী মারা যায়। জেরিন আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। নিশানের ফাঁসির দাবি ওঠে।


১৪ বছর পর মুক্তি পেয়ে নিশান চায় নতুন জীবন শুরু করতে। তবে সমাজ তাকে ‘দাগী’ বলে ঘৃণা করতে থাকে। এমনকি সে যেখানে চাকরি নেয়, সেখানেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।


তার পরিবারও তাকে আর আগের মতো গ্রহণ করতে পারে না।

নিশানের বাবা তার জন্য পাত্রীর সন্ধান করে, কিন্তু মেয়েটি বোবা। নিশান নিজে বলে — “আমি একজন খুনি, দয়া করে আমাকে পাত্র হিসেবে বিবেচনা করবেন না।”


এরপর তার দেখা হয় লিখন নামের এক মেয়ের সঙ্গে, যে তার অতীত জেনেও তার পাশে থাকতে চায়। কিন্তু নিশান এখনো জেরিনের ছায়া ভুলতে পারে না।

নিশান হঠাৎ করে দেখতে পায় জেরিন ও একটি মেয়েকে — কৌশলী। সে বুঝে যায় মেয়েটি তার মেয়ে হতে পারে। জেরিন এখন রবি নামের এক চোরাকারবারির স্ত্রী। রবি বলে কৌশলী তার সৎ মেয়ে।


নিশান কৌশলীর পাশে থাকার চেষ্টা করে — তাকে সাইকেল চালাতে শেখায়, স্কুলে নিয়ে যায়, ভালবাসায় ভরিয়ে তোলে। নিশান বুঝে যায় — এটাই তার recovery, জীবনে দ্বিতীয় একটা সুযোগ।

একদিন কৌশলী তার দাদিকে (সোহাগের মা) ফোন করে বলে — “আমার নতুন বন্ধু হয়েছে, তার নাম নিশান।”


সোহাগের মা অবাক হয়ে যায়।


জেরিন ধীরে ধীরে বুঝতে পারে — নিশান সত্যিই বদলে গেছে, সে আর আগের মতো নেই। কিন্তু তার মাঝে দ্বিধা — কারণ সে জানে না আসলে কৌশলীর বাবা কে।

রঞ্জিত, নিশানের পুরোনো চোরাকারবারি বস, ফোন করে রবি সম্পর্কে সতর্ক করে। রবি তখন নিশানকে তার দলের লোক হিসেবে রাখতে চায়।


এদিকে নিশান চায় না আর সেই জীবনে ফিরতে।


অবশেষে সত্য সামনে আসে — কৌশলীর আসল বাবা নিশানই। এটা জেরিন মানতে পারে না, কারণ তার অতীত এতটা ভয়াবহ ছিল।

নিশান কৌশলীকে জানায় — "আমি তোমার বন্ধু। ডাকলেই চলে আসব। আমি শুধু দূর থেকেই তোমাকে দেখবো। কারণ আমি দাগী।"


নিশান এবার সত্যিকারের মানুষ হয়ে গেছে। সে কৌশলীর জন্য বাঁচতে চায়, নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে।

আপনার যদি গল্পটি ভালো লেগে থাকে, তবে দাগী সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখে আসুন। কারণ এক্সপ্লেইনে আপনি গল্পটা জানলেন, কিন্তু সিনেমায় আপনি মনে রাখার মতো অনুভূতি পাবেন।